বাগমারায় পড়ে গেছে পেয়াজের বাজার দর। এই দরে পেয়াজ বিক্রি করে কৃষক খরচেন টাকা তুলেতে পারছে না। তারপরও পেয়াজ সংরক্ষনের কোন সুযোগ না থাকায় কৃষক লোকসান দিয়ে পেয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে ।
বিগত কয়েক বছর পেয়াজ চাষ করে কৃষকরা তেমন লাভ করতে পারেনি। তবে এবার কৃষকরা সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলে আশায় বুক বেঁধে ছিল । কিন্তু এবারও পেয়াজের দাম পড়ে যাওয়ায় তাদের সে আশায় গুড়েবালি হতে চলেছে। তারপর এবারও লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেয়াজ চাষ হওয়ায় পেয়াজ নিয়ে কৃষকের ভোগান্তি কমছে না।
জানা গেছে, বাগমারার তাহেরপুরের পেয়াজের দেশ জুড়ে খ্যাতি রয়েছে। এই হাটের পেয়াজ বিদেশেও রপ্তানী হয়ে থাকে। মূলত তাহেরপুর হাটে পেয়াজ রপ্তানীর উদ্দেশ্যেই এলাকার কুষকরা পেয়াজ উৎপাদন করে থাকে। স্থানীয় কৃষকরা দুই মৌসুমেই পেয়াজ উৎপাদন করে থাকে। রবি মওসুমের পেয়াজকে সেচ পেয়াজ বলে। যা কার্তিক মাসে রোপন করা হয়। এছাড়া দানা বীজ ফেলে চারা গাছ করে পরে সেই চারা রোপনের মাধ্যমে যে পেয়াজ চাষ করা হয় তাকে আল পেয়াজ বলে। এই পেয়াজ সাধারত কার্তিকের শেষে আগ্রহায়ন পৌষ মাসে চাষ করা হয়। বর্তমানে এই পেয়াজ রোপনেই কৃষক এখন উঠেপড়ে লেগেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে বাগমারায় এবার ৪ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে আল পেয়াজ রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। তবে অনুকুল আবহাওয়ার কারণে এবার পেয়াজ চাষ লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে সেখানে সেচ পেয়াজে বাজার ভরপুর। মানভেদে এই পেয়াজ ৮০০ থেকে আড়েআটশ টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। মাড়িয়ার বেলাল হোসেন জানান, এই দরে পেয়াজ বিক্রি করে কৃষক কোনই লাভ করতে পারবে না। এতে তার খরচের টাকা তোলা মুস্কিল হয়ে পড়বে। তারপরও কৃষকদের পেয়াজ চাষ করতে হচ্ছে।
খামারগ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার জানান, তিনি এবার ১৫ কাঠা জমিতে আল পেয়াজ রোপন করেছেন। প্রতি কাঠায় তার বীজ, সার সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিক মিলে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২ হাজার টাকা। তার মতে এখানে আবহাওয়া অনুকুল থাকলে প্রতি কাঠায় ৪ মণ হারে পেয়াজ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান বাজারে পেয়াজের দর প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা। কৃষক জব্বার, রফিক সহ স্থানীয় কৃষকদের মতে, এই আল পেয়াজ উঠার সময় পেয়াজের বাজার দর বর্তমানের চেয়ে দাম বৃদ্ধি না পেলে তাদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে। তবে তারা পেয়াজের বাজার দর বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুর রাজ্জাক জানান, বাগমারায় পেয়াজ চাষের জন্য এখানকার মাঠি ও আবহাওয়া বেশ অনুকুল থাকায় এখানে পেয়াজের
বাম্পার ফলন হয়। এই পেয়াজ বেশ মানেও ভাল হওয়ায় তা দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী হয়ে থাকে। তার মতে , আগামী দিনগুলোতে পেয়াজের দাম বাড়ার ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে কৃষক পেয়াজ চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।